১। লেন্স ( যার মধ্যে দিয়ে আলো প্রবেশ করবে।)
২। পর্দা/ফিল্ম, সেন্সরঃ আলো টা ঢোকার পর একটা পর্দায় পড়বে, যেটা এই আলোর তীব্রতা এবং রংএর পার্থক্যকে রেকর্ড করবে। অতীতে এই পর্দাকে বলতো ফিল্ম, আর বর্তমানে এটি সেন্সর।
৩। দেখার মাধ্যম (ViewFinder): ছবি তোলার আগে যেই মাধ্যম দিয়ে ছবিটি দেখি.
ক্যামেরার প্রকারভেদঃ
ক্যামেরা অনেকরকমের আছে। আমরা এত প্যাচের মধ্যে না গিয়ে যতটুকু জানা দরকার ঠিক ততটুকুই জানবো।
১। SLR (Single lens reflex) ক্যামেরাঃ অতীতে আমরা যেসব ফিল্মের ক্যামেরা ব্যবহার করতাম সেগুলো বেশীরভাগই ছিলো এস এল আর। আর বর্তমানে ডি এস এল আর (DSLR).
এস এল আর ক্যামেরাগুলোর মূল বৈশিষ্টগুলো:
ক) এই ক্যামেরায় প্রয়োজন মতো লেন্স খোলা এবং বদলানো যায়।
খ) এই ক্যামেরায় একটা আয়না থাকে, যেটা কোন দৃশ্যকে প্রতিফলিত করে একটা প্রিজমের মাধ্যমে ফটোগ্রাফার এর চোখে পাঠিয়ে দেয়। অর্থাত আপনি ছবি তোলার আগে দেখে নিতে পারছেন আপনার ফ্রেমের অবস্থা। দেখে নিতে পারছেন আপনার সুন্দর ল্যান্ডস্কেপ খানার মধ্যে কেউ বিড়ি ফুকতে ফুকতে ঢুকে গেল কি না, কিংবা আপনার সুন্দরী মডেলের মাথাটাই কাটা পড়লো কি না উল্টো পাল্টা ফ্রেমিংয়ের কারনে। অনেকে হয়তো বলেন, আজকাল তো ক্যামেরার পেছনে একটা পর্দায় একেবারে ভিডিওর মতো প্রিভিউ দেখা যায়, তাহলে আর এই আয়না দিয়ে দেখার দরকার কি?
উত্তর টা খুব সহজ।
ধরুন আপনার বাড়ির আয়না টা সরিয়ে আমি একটা ভিডিও ক্যামেরা বসিয়ে দিলাম, যার মাধ্যমে আপনি নিজেকে দেখতে পারবেন একটা টিভিতে..মানে একটা ডিজিটাল আয়না আর কি। ভালো লাগবে আপনার? ব্যপারটা অনেকটা এইরকম ডিএসএলআর এর ক্ষেত্রে। সত্যিকারের আয়নায় যত নিখুত, আর ‘রিয়েল লাইফ’ প্রিভিউ দেখা যায়, সেটা এখন পর্যন্ত কোন ডিজিটাল স্ক্রিন রিপ্লেস করতে সক্ষম হয়নি। আপনি যদি একবার এসএল আর এর ভিউ ফাইন্ডারে ছবি দেখে অভ্যস্ত হয়ে যান, তাহলে আর ডিজিটাল প্রিভিউ আপনার ভালো লাগবে না।
![]() |
DSLR Camera (Nikon D5200) |
এই ক্যামেরাগুলা অনেকটা ‘প্যাকেজ’ প্রোগ্রামের মতো। অর্থাৎ, এতে একটা লেন্স ফিক্সড করে দেয়া থাকে, যেটা খোলা সম্ভব নয়। এছাড়াও, এতে এস এল আর ক্যামেরার মতো কোন আয়না থাকেনা। আগেই বলেছি, ডিএসএলআর ক্যামেরার আয়নার কাজ হলো কোন দৃশ্যকে ক্যামেরায় ধরার আগে সেটাকে আপনার চোখে পৌছে দেয়া। এই কাজটি পয়েন্ট অ্যান্ড শুট ক্যামেরায় করা হয় সরাসরি ডিজিটাল ‘লাইভ ভিউ দিয়ে। আসলে আজকাল সবরকম ক্যামেরাতেই এই ডিজিটাল ভিউ দেখার ব্যবস্থা আছে..কিছুদিন আগে এস এল আর এ ছিল না (আমারটায় নাই); এসএলআর এ এখন দুরকমই একসাথে থাকে…মিরর ভিউ এবং ডিজিটাল লাইভ ভিউ…যেটা খুশি ব্যবহার করতে পারেন।
পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরায় আয়না থাকেনা, তুলনামূলভাবে ছোট একটি সেন্সর ব্যবহৃত হয় এবং লেন্স এর সাইজ হয় ছোট। কাজেই ওভারঅল, এই ক্যামেরাগুলো আকারে এসএলআর এর চেয়ে অনেক ছোট, সহজে বহনযোগ্য। এই কারনে শখের ফটোগ্রাফী বা পারিবারিক ছবি তোলার জন্যে অনেকেই এই ক্যামেরা কিনে থাকেন। এখন আর বারো বছরে যুগ নাই, বছর বছর যুগ পাল্টায়। কাজেই আজকাল দেখবেন ফ্যামিলি ফটোগ্রাফ তোলার জন্যেও অনেকে ডিএসএলআর ই ব্যবহার করে থাকেন।
মিররলেস ইন্টারচেঞ্জেবল লেন্স ক্যামেরা:
এই ক্যামেরাগুলোকে বলা যায় কম্প্যাক্ট পয়েন্ট এন্ড শুট এবং ডিএসএলআর এর মাঝামাঝি একটা অপশন। এই ক্যামেরাগুলোর সেন্সর সাইজ হয় পয়েন্ট এন্ড শুটের চেয়ে বড়; কিছু আছে যেগুলো APS-C সেন্সর ব্যবহার করে, আর কিছু আছে যেগুলোতে তার চেয়ে ছোট সেন্সর। (ছবিতে Micro four-thirds সেন্সর সাইজটি দেখুন) | এই ক্যামেরাতে ডিএসএলআর এর মতো মিরর নেই, কাজেই অপটিক্যাল ভিউফাইন্ডারের সুবিধা পাবেন না, যদিও লাইভ প্রিভিউ থাকবে। আর ডিএসএলআর এর মতোই অনেক লেন্স এর অপশন আছে, যেটা খুশি (কিনে আর কি) ক্যামেরার বডিতে লাগাতে পারবেন। সহজে বহনযোগ্য, আর সেন্সর বড় বলে তুলনামূলক ভাবে ছবির কোয়ালিটি পয়েন্ট এন্ড শুট ক্যামেরা’র চেয়ে ভাল।
![]() |
প্যানাসনিক লুমিক্স মিররলেস ক্যামেরা |
হাইব্রিড ক্যামেরা:
সময়ের সাথে সাথে ইঞ্জিনিয়াররা চেষ্টা করছেন কিভাবে নানা রকম অপশন একসাথে জুড়ে দিয়ে ফটোগ্রাফারদের মন জয় করা যায়। এখন অনেক ক্যামেরা আছে, যেগুলো ছোট হলেও, একটা অপট্যিকাল ভিউফাইন্ডার এবং লাইভ ভিউ, দুটোই থাকে। কিভাবে? খুব সহজ। ডিএসএলআর এর মিরর নেই এর ভিতরে, কিন্তু ক্যামেরার উপর দিকে একটা ‘ওপেনিং’ থাকে, যেটা দিয়ে আপনি সরাসরি ফ্রেম টাকে দেখতে পাবেন। এসএলআর এর মতো ‘থ্রো দ্য লেন্স’ হবে না যদিও…তারপরও অনেকে এই অপশন টা পছন্দ করেন। ফুজিফিল্ম X100 বা X100s এইধরনের হাইব্রিড ক্যামেরা।
![]() |
ইব্রিড ক্যামেরা ফুজি এক্স১০০এস। |